জাহাঙ্গীর আলম
জীবন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে যেতে নেই। অন্তত আমাদের দায় মেটানোর সুযোগটা তো দেওয়া উচিত! তা না হলে যে আমাদের নাছোড়বান্দা বিবেক সারা জীবন ঘুমাতে দেবে না। ফাহির, ভাই আমার, কেন অকস্মাৎ এমন করলেন! আপনার উচিত ছিল অনেক দিন সময় দেওয়া। তাতে দিনে দিনে সবার সয়ে যেত।
আপনি হাসপাতালের বিছানার সঙ্গে মিশে যেতেন। আমরা বহু চেষ্টার পর সময় বের করে হাতে হরলিক্স আর ফলের কার্টন নিয়ে আপনাকে দেখতে যেতাম। আমাদের দেখে কোটরে ঢুকে যাওয়া আপনার চোখ খানিক জ্বলজ্বল করে উঠত। চাপা ভাঙা মুখে হাসতে গিয়ে পুরো চেহারাটাই বিকৃত হয়ে যেত। মাথার কাছে বসে শীর্ণ হাতখানা মুঠোর ভেতর ভরে বলতাম, ফাহির, আপনার কিচ্ছু হয়নি। দ্রুতই সেরে উঠবেন। এই মিথ্যা আশ্বাস আপনিও বুঝতেন। কিন্তু তাতেও তো কিছুটা সময়ের জন্য যন্ত্রণা লাঘব হতো। এভাবে আমাদের সয়ে যেত একদিন। আপনার শেষযাত্রার জন্য হয়তো আমরা মনে মনে প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতাম! এটুকু উপকার তো করতে পারতেন!
কিন্তু না, আপনি কাউকেই তোয়াক্কা করলেন না। একটা মেয়ে হাতভরে মেহেদির আলপনা এঁকে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এটা তো আপনি জানতেন। আমি নিশ্চিত, যতক্ষণ হুঁশে ছিলেন তাঁর মুখটাই আপনার চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠেছে।
আপনি মা-বাবার আদুরে ছিলেন। তাই বলে সবার ভালোবাসার জোর পরীক্ষার জন্য জেদ ধরে বসলেন! জানি, আপনি প্রচণ্ড একগুঁয়ে। জেদ চেপে বসলে আর কাউকে পরোয়া করেন না। এই তো সেদিন, পাত্রীপক্ষ দেখতে আসবে বলে আপনি বাড়ি যাওয়ার জন্য ছুটি চাইলেন। এত করে বলার পরও এতটা পথ বাইক চালিয়ে গেলেন, এলেন। তাই বলে জীবন দিয়ে জেদ রাখতে হবে?
আপনি বোঝেন না মৃত মানুষের স্মৃতি কর্পূরের মতো? এই যে এত স্মৃতিচারণা, শোকগাথা, শোকসভা, ভাসা ভাসা অগভীর তরল আবেগমথিত বক্তৃতা, আপনি জানেন এগুলো তুচ্ছ, দায়সারা! শিগগির সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আবার হাসিঠাট্টা, কলতানে ভরে উঠবে আপনার স্বজনদের বাড়ির আঙিনা, আপনার কর্মস্থল। আলাপে হয়তো আপনার নামও উঠবে, কিন্তু সে আর কারও হৃদয় ভারাক্রান্ত করবে না।
বরং আপনার সেই শিশুসুলভ সরলতা, আপনি একটা গল্প কখনো সংক্ষেপে বলতে পারতেন না, শিশুদের মতো সবিস্তারে বলতেন, সেটি মাঝে মাঝে আমার বিরক্তি উৎপাদন করত। আপনি জেনে হয়তো খুশি হবেন, আপনার সেই আচরণ আর বিরক্তি উৎপাদন করবে না!
কিন্তু জানেন, সেটি হয়তো সহজে হওয়ার নয়। এই যে জীবনের শুরুতেই আচমকা নিভে যাওয়ার আগে সবার মনে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, সে কি সহজে মুছে যাওয়ার! আপনাকে ভালোবাসার কথা বলে আর আদিখ্যেতা করতে চাই না। কী লাভ! সে তো আর আপনার কাছে পৌঁছাবে না।
জানি, বহু কাল আপনি কোনো আড্ডায় অথবা একাকিত্বের কালে হঠাৎ উঁকি দিয়ে চারপাশটা বিষণ্ন করে তুলবেন। এ থেকে আমাদের কাউকে মুক্তি দেবেন না—এটুকুই আবদার।
জীবন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে যেতে নেই। অন্তত আমাদের দায় মেটানোর সুযোগটা তো দেওয়া উচিত! তা না হলে যে আমাদের নাছোড়বান্দা বিবেক সারা জীবন ঘুমাতে দেবে না। ফাহির, ভাই আমার, কেন অকস্মাৎ এমন করলেন! আপনার উচিত ছিল অনেক দিন সময় দেওয়া। তাতে দিনে দিনে সবার সয়ে যেত।
আপনি হাসপাতালের বিছানার সঙ্গে মিশে যেতেন। আমরা বহু চেষ্টার পর সময় বের করে হাতে হরলিক্স আর ফলের কার্টন নিয়ে আপনাকে দেখতে যেতাম। আমাদের দেখে কোটরে ঢুকে যাওয়া আপনার চোখ খানিক জ্বলজ্বল করে উঠত। চাপা ভাঙা মুখে হাসতে গিয়ে পুরো চেহারাটাই বিকৃত হয়ে যেত। মাথার কাছে বসে শীর্ণ হাতখানা মুঠোর ভেতর ভরে বলতাম, ফাহির, আপনার কিচ্ছু হয়নি। দ্রুতই সেরে উঠবেন। এই মিথ্যা আশ্বাস আপনিও বুঝতেন। কিন্তু তাতেও তো কিছুটা সময়ের জন্য যন্ত্রণা লাঘব হতো। এভাবে আমাদের সয়ে যেত একদিন। আপনার শেষযাত্রার জন্য হয়তো আমরা মনে মনে প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতাম! এটুকু উপকার তো করতে পারতেন!
কিন্তু না, আপনি কাউকেই তোয়াক্কা করলেন না। একটা মেয়ে হাতভরে মেহেদির আলপনা এঁকে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এটা তো আপনি জানতেন। আমি নিশ্চিত, যতক্ষণ হুঁশে ছিলেন তাঁর মুখটাই আপনার চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠেছে।
আপনি মা-বাবার আদুরে ছিলেন। তাই বলে সবার ভালোবাসার জোর পরীক্ষার জন্য জেদ ধরে বসলেন! জানি, আপনি প্রচণ্ড একগুঁয়ে। জেদ চেপে বসলে আর কাউকে পরোয়া করেন না। এই তো সেদিন, পাত্রীপক্ষ দেখতে আসবে বলে আপনি বাড়ি যাওয়ার জন্য ছুটি চাইলেন। এত করে বলার পরও এতটা পথ বাইক চালিয়ে গেলেন, এলেন। তাই বলে জীবন দিয়ে জেদ রাখতে হবে?
আপনি বোঝেন না মৃত মানুষের স্মৃতি কর্পূরের মতো? এই যে এত স্মৃতিচারণা, শোকগাথা, শোকসভা, ভাসা ভাসা অগভীর তরল আবেগমথিত বক্তৃতা, আপনি জানেন এগুলো তুচ্ছ, দায়সারা! শিগগির সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আবার হাসিঠাট্টা, কলতানে ভরে উঠবে আপনার স্বজনদের বাড়ির আঙিনা, আপনার কর্মস্থল। আলাপে হয়তো আপনার নামও উঠবে, কিন্তু সে আর কারও হৃদয় ভারাক্রান্ত করবে না।
বরং আপনার সেই শিশুসুলভ সরলতা, আপনি একটা গল্প কখনো সংক্ষেপে বলতে পারতেন না, শিশুদের মতো সবিস্তারে বলতেন, সেটি মাঝে মাঝে আমার বিরক্তি উৎপাদন করত। আপনি জেনে হয়তো খুশি হবেন, আপনার সেই আচরণ আর বিরক্তি উৎপাদন করবে না!
কিন্তু জানেন, সেটি হয়তো সহজে হওয়ার নয়। এই যে জীবনের শুরুতেই আচমকা নিভে যাওয়ার আগে সবার মনে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, সে কি সহজে মুছে যাওয়ার! আপনাকে ভালোবাসার কথা বলে আর আদিখ্যেতা করতে চাই না। কী লাভ! সে তো আর আপনার কাছে পৌঁছাবে না।
জানি, বহু কাল আপনি কোনো আড্ডায় অথবা একাকিত্বের কালে হঠাৎ উঁকি দিয়ে চারপাশটা বিষণ্ন করে তুলবেন। এ থেকে আমাদের কাউকে মুক্তি দেবেন না—এটুকুই আবদার।
তারাপদ রায় দুই বাংলার প্রতিষ্ঠিত কবি হলেও তাঁর জন্ম ও শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো কেটেছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শহরে। তিনি ১৯৩৬ সালের ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালতপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন টাঙ্গাইল জজকোর্টের আইনজীবী।
৭ ঘণ্টা আগেআধুনিক আফ্রিকান সাহিত্যের পুরোধা ব্যক্তিত্ব চিনুয়া আচেবের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ নভেম্বর নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ওগিদিতে। তিনি ইবাদান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতকদের একজন। লেখাপড়া শেষে নাইজেরিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে রেডিও প্রযোজক ও এক্সটারনাল ব্রডকাস্টিংয়ের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১ দিন আগেবারী সিদ্দিকী সংগীতজীবনের প্রথম দিকে বংশীবাদক হিসেবে পরিচিত পেলেও পরবর্তী সময়ে তিনি একজন লোকসংগীতশিল্পী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
২ দিন আগেতিনি ছিলেন একজন আদর্শবান শিক্ষক—অজিতকুমার গুহর এটাই সবচেয়ে বড় পরিচয়। নিজের জাগতিক উন্নতিকে কখনো বড় করে দেখেননি তিনি। শিক্ষার্থীদের আদর্শ জীবন উপহার দেওয়াই ছিল তাঁর ব্রত। তিনি সক্রিয় ছিলেন ঢাকার প্রগতিশীল সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিসরেও। সুবক্তা হিসেবে তাঁর খ্যাতির কমতি ছিল না।
৫ দিন আগে